Pages

Tuesday, February 21, 2012

বসার ঘরের সাজ

বসার ঘরের সাজ

- শাহীতাজ আক্তার

 




আজকাল আধুনিক ফ্ল্যাটগুলোয় আলাদা বসার ঘরের অস্তিত্ব নেই এমনটা মেনে নেয়াই যায় না। বসার ঘর অতিথিদের কাছে আপনার আভিজাত্য আর রুচিবোধের পরিচায়ক। মানুষ নিজের রুচিবোধ আর সামর্থ্যের সমন্বয়ে সাজিয়ে তোলে নিজস্ব ঢঙে তার অতিথি আপ্যায়নের কক্ষটি বা বসার ঘরটি। বসার ঘর কেমন হবে তা অবশ্যই নির্ভর করবে আপনার ঘরের আকার এবং আয়তনের ওপর। তবে আপনার বসার ঘরটি আকার এবং আয়তনের দিক দিয়ে যেমনই হোক না কেন, সেটি সুন্দর করে সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখার দায়িত্ব কিন্তু আপনারই।
আপনার বাসায় যদি লোকসংখ্যা অনুপাতে ঘর যদি কম হয় তাহলে আপনি আপনার বসার ঘরে সোফাসেটের পাশাপাশি একটা ছোট বেডও দিতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে খাট না দিয়ে আপনি যদি শুধু একটা ম্যাট্রেস বিছিয়ে দেন সেটা অনেক ভালো দেখাবে। যদি বেড রাখতে না চান তাহলে একপাশে একটা ডিভান দিতে পারেন। ব্যবহার করতে পারেন ইনডোর প্লান্টস আর একটা কর্নার র্যাকও। যদি আপনার বসার ঘরটি আকারে একটু বড় হয় তাহলে আপনি একপাশে একটি বড় পটারিও ব্যবহার করতে পারেন। আর দেয়ালে দিতে পারেন কিছু সুন্দর পেইন্টিংস অথবা আপনার পরিবারের সবার এক সঙ্গে তোলা ছবি বাঁধাই করে। তবে অবশ্যই বসার ঘরের একপাশে প্রতিদিন কিছু তাজা ফুল অথবা কিছু সুন্দর শুকনো ফুল রাখতে ভুলবেন না।
আপনার বসার ঘরের সাজসজ্জা কেমন হবে সে বিষয়ে কথা বলেছেন ফারজানা’স ব্লিসের স্বত্বাধিকারী ফারজানা গাজী।
বসার ঘরের সাজ
তিনি বলেন, ‘সাধারণত নতুন ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্টের ইন্টেরিয়র ডিজাইন নির্ভর করে আপনার ফ্ল্যাটটি কত স্কয়ার ফিটের, রুম সংখ্যা এবং অবশ্যই যিনি বসবাস করবেন তার রুচিশীলতার ওপর। আপনি ইচ্ছে করলে যে কোনো ধরনের আসবাব দিয়ে সাজাতে পারেন আপনার ঘর, সেটি দেশি, আধুনিক অথবা ভিক্টোরিয়ান যাই হোক না কেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে প্রতিটি ঘরের বা কামরার আসবাবের ভেতর যেন সামঞ্জস্য থাকে।
প্রথমেই আসা যাক ফ্লোর সজ্জার ক্ষেত্রে। ফ্লোরে ব্যবহার করতে পারেন টাইলস, মোজাইক অথবা মিরর। তবে ফ্লোরে সাধারণত হালকা বিজ কালার এবং মিরর ব্যবহার করলে সেটি একটি ভিন্নমাত্রা আনবে। ফ্লোরের ক্ষেত্রে গাঢ় রং ব্যবহার না করাই ভালো।
বসার ঘরের ক্ষেত্রে হালকা রং ব্যবহার করাই ভালো। আর যদি আপনার পছন্দ হয় গাঢ় রং তাহলে যে কোনো একটা দেয়াল আপনি গাঢ় রঙের করতে পারেন। এক্ষেত্রে ফার্নিচার রুম বড় হলে ইউ/এল শেপ ব্যবহার করা যায়। আর বসার ঘর যদি ছোট হয় তাহলে দুটি সোফা ব্যবহার না করে আপনি একপাশে একটি ডিভান বা দোলনা ব্যবহার করতে পারেন। আবার আপনি চাইলে দু’পাশে কম উচ্চতার সোফা এবং এক কোণে টিভি রাখুন। চাইলে কার্পেট, শতরঞ্জি অথবা শীতল পাটি দিয়ে ফ্লোরিংও করতে পারেন। এর ওপর ছোট-বড় কয়েকটি সুন্দর কুশন কভার দিতে পারেন। আবার বসার ঘরের জায়গা যদি বড় হয় তাহলে দেয়ালজুড়ে একটা বইয়ের তাক বানাতে পারেন। টিভি দেখার পাশাপাশি অবসরে বই পড়ার চমত্কার জায়গা হতে পারে বসার ঘর। আজকাল অনেকে এলসিডি ওয়াল টিভি দেখতে ভালোবাসেন, সেক্ষেত্রে ওই দেয়ালটি গাঢ় রঙের করে নিতে পারেন। সঙ্গে ব্যবহার করতে পারেন ডেকোরেটিং প্লান্ট। লাইটিং করতে পারেন সাদা অথবা লাল আলো দিয়ে। অনেক সময় ইলেকট্রিক সুইচের জায়গাগুলো থেকে ফলস সিলিং করে আলো-আঁধারীর খেলা করে নিতে পারেন। আর বসার ঘরের সোফার কুশন কাভার পর্দার সঙ্গে মিলিয়ে নেয়াই ভালো। আপনার বাচ্চা যদি ছোট হয় তাহলে তার জন্য একটা কর্নার সাজাতে পারেন। ছোট আকারে তৈরি করুন একটি খেলাঘর, সেখানে রাখুন পুতুল, গাড়ি, ছোট একটা টেবিল, ছবি আকার সরঞ্জাম। এছাড়া বাচ্চাদের পাশের দেয়াল বিভিন্ন কার্টুন চরিত্র যেমন—মিকি মাউস, সিনড্রেলা, ডোরেমন এবং অ্যানিমেশন ছবি দিয়ে।’
প্যাসেজের সাজ
ফ্ল্যাটের প্যাসেজের আয়তন সাধারণত তিন থেকে চার ফুট হয়। মূল দরজার প্রবেশ পথে প্যাসেজ হলে দেয়ালে পরিবারের ছবি না রেখে আয়না বা দেশ-বিদেশের বাঁধাই করা বড় ছবি দিয়ে সাজিয়ে তুলুন। প্যাসেজ কিছুটা বড় হলে দেয়ালের সঙ্গে মিশিয়ে রাউন্ড বা ওভাল ডেকোরেটিভ টেবিল রাখতে পারেন। আর দেয়ালে সুন্দর একটি সজ্জিত বড় আয়না। ডেকোরেটিভ টেবিলের ওপর রাখুন শোপিস, কৃত্রিম ফুলের ঝাড় ইত্যাদি। প্যাসেজে সুন্দর করে বানানো জুতার র্যাক দিতে পারেন। প্যাসেজের ফলস সিলিং দিয়ে রঙিন আলোর ব্যবস্থা করতে পারেন। এতে আপনার প্যাসেজে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।’
আপনার ফ্ল্যাটের আয়তনের সঙ্গে মিলিয়ে, ঘরের রং আর ডিজাইনের সঙ্গে মিলিয়ে আসবাব আপনি বেছে নিতে পারেন অটবির শোরুম থেকে। এখানে আপনি পৃথক পৃথক ডিজাইনের সামঞ্জস্যপূর্ণ আসবাব পাবেন খুব সহজেই। তাহলে আর দেরি না করে বেরিয়ে পড়ুন আপনার পছন্দের আসবাবের খোঁজে আর সাজিয়ে নিন আপনার আপন নিবাস।


No comments:

Post a Comment